চট্টগ্রামে সংঘর্ষের মধ্যে নিহত সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) সাইফুল ইসলামকে বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী হিসেবে দাবি করে গুজব ছড়িয়েছে ভারতীয় কিছু সংবাদমাধ্যম ও অনেক এক্স (সাবেক টুইটার) ব্যবহারকারী। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সও চট্টগ্রামের পুলিশ কর্মকর্তা লিয়াকত আলীর বরাত দিয়ে এই দাবি উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল।
তবে ফ্যাক্ট চেক (তথ্য যাচাই) প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানার বলেছে, এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। শুধু এটি নয়, আইনজীবী সাইফুলের হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে পড়া আরও কিছু গুজব ও অপতথ্যের ফ্যাক্ট চেক (তথ্য যাচাই) করেছে রিউমার স্ক্যানার। বুধবার রাতে সংস্থাটি এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
ওই প্রতিবেদনে রিউমার স্ক্যানার বলছে, ভারতের অসংখ্য এক্স ব্যবহারকারী এবং কিছু গণমাধ্যমে গুজব ছড়ায় যে সাইফুল ইসলাম ছিলেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী এবং সেই দায়িত্ব পালনের কারণেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। তবে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী ছিলেন শুভাশিস শর্মা। এ তথ্য চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষ থেকে জমা দেওয়া ওকালতনামা এবং আইনজীবী আলিফ নিহত হওয়ার আগে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।
আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় ক্লোজড সার্কিট (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজের ভিত্তিতে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি দাবি ছড়িয়ে পড়ে। দাবি করা হয়, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে চারজন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সদস্য এবং একজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক। রিউমার স্ক্যানার বলেছে, এটিও সত্য নয়।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র উপকমিশনার মো. রইস উদ্দিন এ বিষয়ে রিউমার স্ক্যানারকে বলেন, ‘এ ধরনের কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।’
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ভূয়া তথ্য ছড়ানো হয় যে, তিনি স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছেন বা নারী নির্যাতনে জড়িত ছিলেন, যা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া, বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন একটি ভিডিও শেয়ার করে, তবে রিউমার স্ক্যানার নিশ্চিত করেছে যে, এটি ঢাকার কলেজ সংঘর্ষের ভিডিও ছিল। ফ্যাক্ট চেক প্রতিষ্ঠান এসব গুজব উন্মোচন করে সঠিক তথ্য প্রদান করেছে।