ঢাকাশুক্রবার , ৯ আগস্ট ২০২৪
  • অন্যান্য
  1. অর্থনীতি
  2. আইন আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আবহাওয়া
  5. ক্যাম্পাস
  6. খেলাধুলা
  7. চাকরি
  8. জাতীয়
  9. তথ্যপ্রযুক্তি
  10. ধর্ম
  11. ফিচার
  12. বিনোদন
  13. মতামত
  14. রাজনীতি
  15. লাইফস্টাইল
আজকের সর্বশেষ সবখবর

আতঙ্কে রাত জেগে পাহারা, ফিরতে শুরু করেছে পুলিশ

নিউজ ডেস্ক
আগস্ট ৯, ২০২৪ ৯:০৪ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

বিশৃঙ্খল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মধ্যে মানুষ নিজেরাই নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে৷ সারাদেশে পাড়া-মহল্লায় বাসিন্দারা নিজেরাই রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন৷ এর মধ্যেই ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির খবর পাওয়া গেছে৷ কয়েক এলাকায় এলাকাবাসী নিজেরাই ডাকাত ধরে সেনাবাহিনীর কাছে সোপর্দ করেছে৷ এদিকে থানাগুলোতে ফিরতে শুরু করেছেন পুলিশ সদস্যরা৷ তবে খুব সহসাই স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করার সুযোগ কম৷ কারণ অধিকাংশ থানা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে৷

ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের কমিশনার মইনুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘পুলিশ সদস্যরা কাজে ফিরতে শুরু করেছে৷ আজ আমি কয়েকজন ওসিকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলাম৷ তাদের কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছি৷ যেসব থানা আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, ওই থানাগুলো পরিষ্কার করে স্বল্প পরিসরে কাজ শুরু করা হবে৷ এছাড়া যে থানাগুলোতে হামলা হয়নি, সেগুলোতে পুরোদমে কাজ শুরু হচ্ছে৷ শুক্রবার বা শনিবার থেকেই থানার স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরুর চেষ্টা করছি৷ পুলিশ কাজ শুরু করতে পারলে মানুষের মধ্যে যে আতঙ্ক আছে, সেগুলো আর থাকবে না৷ আমরা মানুষকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছি৷”

পুলিশবিহীন রাজধানীতে বুধবার রাতে কিছু এলাকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটছে৷ এতে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে আতঙ্ক৷ নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে মানুষ৷ বাসিন্দারা বলেছেন, থানা-পুলিশের কার্যক্রম শুরু করা এখন খুবই জরুরি৷ মিরপুর, মোহাম্মদপুর, বছিলা, কালশী, ইসিবি চত্বর, উত্তরা, বাড্ডা ও ধানমন্ডি এলাকায় ডাকাতির চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী৷ আতঙ্কে কিছু এলাকায় রাত জেগে পাহারা বসিয়েছে ছাত্রজনতা৷ কোথাও কোথাও মসজিদের মাইকে দেওয়া হচ্ছে সতর্কতার বার্তা৷ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও পোস্ট করা হচ্ছে এমন তথ্য৷

মোহাম্মদপুরের পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটির ১০ নম্বর রোডের বাসিন্দা ও একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার অপলক হাসান সজীব ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বুধবার রাত ২টা ১০ মিনিটের দিকে ৭-৮ জন এসে আমাদের বাড়ির গেট ভাঙতে চেষ্টা করে৷ কিন্তু আমাদের সিকিউরিটি গার্ড সচেতন থাকায় তিনি সবাইকে দ্রুত খবর দেন৷ ফলে আমরা সবাই নেমে আসলে তারা পালিয়ে যায়৷ এ সময় আশপাশের বাড়ির বাসিন্দারাও নেমে আসেন৷ যারা এসেছিল তাদের মধ্যে দুই তিনজন ছিল মধ্যবয়সি৷ আর অধিকাংশ বয়সে তরুণ৷ তাদের দেখে মনে হয়েছে কোনো বস্তি থেকে এসেছে৷ আসলে আমরা খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছি৷”

এছাড়া বুধবার গভীর রাতে কাজীপাড়ার বাঁশপট্টি এলাকায় একাধিক বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে৷ ওই দিন গভীর রাতে উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরে ও আদাবরে একাধিক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী৷ উত্তরা ১১, ১২ ও ১৪ নম্বর সেক্টরে ডাকাতি হচ্ছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর মসজিদের মাইক থেকে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়৷ উত্তরা এলাকা থেকে ১১ জন ডাকাতকে ধরে এলাকাবাসী সেনাবাহিনীর কাছে সোপর্দ করেছে৷ ক্যান্টনমেন্ট থানা এলাকার ইসিবি চত্বরের পাশে অনলাইন গ্রুপের জমি, ভবন দখল নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে বুধবার রাতে গোলাগুলি হয়েছে বলে জানা গেছে৷

চলমান অরাজকতা, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম বন্ধের মাধ্যমে দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শক্ত অবস্থান গ্রহণের বিষয়ে বাহিনী প্রধানরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ বৃহস্পতিবার সেনাসদরে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে নৌ ও বিমান বাহিনী প্রধানের উপস্থিতিতে পুলিশের নবনিযুক্ত আইজিপি, র‌্যাবের মহাপরিচালক এবং ডিএমপি কমিশনার সাক্ষাৎ করেন৷

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, সাক্ষাতে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেনাবাহিনীর সহায়তায় দেশের সব থানার কার্যক্রম শুরু করার বিষয়ে আলোচনা হয়৷ এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে৷

পুলিশ সদর দপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পুলিশের নবনিযুক্ত মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম পুলিশ সদস্যদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগদানের আহ্বান জানিয়েছিলেন৷ তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে পুলিশ সদস্যরা কর্মস্থলে ফিরছেন৷ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যেসব পুলিশ সদস্য কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন তাদেরকে আসার পথে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষার্থী এবং আপামর জনসাধারণ যাতে পুলিশ সদস্যরা নিরাপদে কর্মস্থলে আসতে পারেন সেজন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন৷

রাজধানীর শের-ই বাংলা নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহাদ আলী  বলেন, ‘‘আমার থানা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে৷ এখানে শুধুই ধ্বংসস্তূপ৷ বসে কাজ করার কোনো সুযোগ নেই৷ আজকে সবাই এসেছিল, আমি তাদের চলে যেতে বলেছি৷ থানার অবস্থা আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি৷ আশা করছি, আগামীকাল শুক্রবার থেকে স্বল্প পরিসরে কাজ শুরু করতে পারব৷ তবে এলাকায় টহলসহ অন্যান্য কার্যক্রম শুরু করতে সময় লাগবে৷ পুলিশের গাড়িগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে৷ বৃহস্পতিবার রাতে থানায় বসার মতো একটা জায়গা তৈরি করা হবে৷ এরপরই আমরা কার্যক্রম শুরু করব৷”

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।