ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার যদি ইসলাম ও স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ববিরোধী কোনো পদক্ষেপ নেয় তবে জনগণ তা সহ্য করবে না। আপনারা ইসলামকে গুরুত্ব দিবেন না তা হবে না।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ চত্বরে, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের উদ্যোগে ‘ভারতীয় পানি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে গণহত্যার’ বিচারের দাবিতে ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার বয়স ৫৩ বছর চলছে। এতদিনে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। এরা দেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছে। ১৫ বছর ধরে বাকস্বাধীনতা ছিল না। কোনো ঘটনায় প্রতিবাদ করে রাস্তায় নামলে গুম হতে হতো। এতদিন আমরা স্বাধীন দেশে বসবাস করেছি ঠিক, কিন্তু বাস্তবিক অর্থে স্বাধীন ছিলাম না।
তিনি বলেন, আগামীদিনে এই স্বাধীন বাংলাদেশকে যাতে আমরা পরাধীন না করি সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। গত ৫ আগস্টের পর একটি মহল পতিত স্বৈরাচারের মতো চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব শুরু করেছে। বিপরীতে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ৫ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুদের মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা পাহারা দিয়েছে। রাস্তায় ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করেছে। আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই।
ছাত্রসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল বশর আজিজী। সমাবেশ পরিচালনা করেন সেক্রেটারি জেনারেল মুনতাসীর আহমাদ।
এসময় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, ছাত্রদের বুকের তাজা রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে কেউ কেউ পকেট ভারী করতে ওঠেপড়ে লেগেছে। বিদেশি কোনো অপশক্তি এ ভূখণ্ডের দিকে নজর দিতে চাইলে তাদের ষড়যন্ত্র ভন্ডুল করে দিতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যতদিন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে ততদিন আমরা তাদের পাশে থাকব। খুন-গুমের বিচার চাই। গত ১৫ বছর ধরে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে হবে। ইসলামবিরোধী শিক্ষা কমিশন বাতিল করতে হবে।
ভারতের চারপাশে যারা আছে তারা কেউ ভারতের বন্ধু নয় উল্লেখ করে সংগঠনটির ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মুফতী সৈয়দ এছহাক মুহাম্মদ আবুল খায়ের বলেন, আমরা বাংলাদেশ ভারতের পেটের মধ্যে না বরং ভারত আমাদের পেটের মধ্যে। শেখ হাসিনাকে জায়গা দিয়ে ভারত প্রমাণ করেছে তারা আমাদের বন্ধু নয়। অথচ বিশ্বের অন্য কোনো দেশ এই খুনি স্বৈরাচারীকে স্থান দেয়নি। এই স্বৈরাচার ও খুনিকে জায়গা দিয়ে বন্ধুত্ব করা সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মাদ আমিনুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম, বরকতুল্লাহ লতিফ, ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ নেছার উদ্দীন, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম সভাপতি অধ্যাপক নাছির উদ্দীন বক্তব্য দেন।