বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) খেলার মাঠের স্বল্পতার কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায়ই ঝামেলা হচ্ছে, যার ফলশ্রুতিতে গত শুক্রবার (১২ আগস্ট) একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস এবং মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই সংঘর্ষে দুই বিভাগের প্রায় ১২ জন শিক্ষার্থী আহত হয় যার মধ্যে কয়েকজনকে হাসপাতালেও ভর্তি করানো হয়। এদের মধ্যে একজন শিক্ষার্থীর হাত ও আরেকজন শিক্ষার্থীর পায়ের আঙুল ভেঙে গেছে এবং বাকীদের ছোটখাটো জখম হয়েছে বলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনার সূত্রপাত হয় শুক্রবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে নবনির্মিত বিটাক ভবনের ভেতরে। সেখানে একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী আগে মাঠ দখল করে খেলা করছিলো পরে জায়গার অপ্রতুলতা দেখা দিলে মার্কেটিং বিভাগের আরমান আহমেদের সাথে বাধে আপত্তি এবং তখনই একদফা দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় উভয় বিভাগের শিক্ষার্থীরা আবারও জড়ো হয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে, যাতে ১০ জনের মতো শিক্ষার্থী আহত হন।
প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলার মাঠ রয়েছে মাত্র একটি। সেই মাঠটিও সংস্কারের নামে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে। গত মে মাসে মাঠের সংস্কার কাজ শুরু হলেও নির্ধারিত সময়, অর্থাৎ ১৮ আগস্টের মধ্যে কাজ শেষ হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীদের বাধ্য হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে ছোট জায়গায় খেলাধুলা করতে হয়, যা প্রায়শই এমন অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম দিচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র খেলার মাঠটিতেই শহীদ মিনার এবং ব্যাডমিন্টন ও ভলিবল কোর্টও বানানো হয়েছে। এতে খেলার সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ে এবং অনেক শিক্ষার্থীকে হতাশ হয়ে ফিরে যেতে হয়। শিক্ষার্থীদের মতে, পর্যাপ্ত খেলার জায়গার অভাবে কেবল অস্থিতিশীল পরিবেশই তৈরি হচ্ছে না, তাদের মেধার সঠিক বিকাশও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ফুটবল টিমের অধিনায়ক কাজী সালমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে মাটি তুলে সংস্কার করা হচ্ছে। কাজটি অনেকদিন আগে শুরু হলেও এখনো শেষ করতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। বৃষ্টির সময় হওয়ায় মাটি পাওয়া যাচ্ছে না বলে আমরা জেনেছি। এতে আমরা খেলাধুলা করতে পারছি না নিয়মিত। প্রশাসনের কাছে দাবি থাকবে দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ করে মাঠটি খেলাধুলার উপযোগী করার জন্য।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপপ্রধান প্রকৌশলী মুরশিদ আবেদিন বলেন, “বৃষ্টির কারণে সংস্কার কাজ শেষ হতে কিছুটা দেরি হচ্ছে, তবে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে।”
মন্তব্য করুন