বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২ বছরের একটি শিশুর জরুরি চিকিৎসায় চরম অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সন্ধ্যায় এক্সিডেন্টে আহত সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটে যান বরিশাল নগরীর বাসিন্দা সৈয়দা মাহফুজা মিষ্টি। কিন্তু সেখানে চিকিৎসা নিতে গিয়ে তাকে পড়তে হয় অকল্পনীয় ভোগান্তিতে।
অভিযোগকারী মিষ্টি জানান, জরুরি বিভাগ থেকে শিশুটিকে গুরুতর মনে করে শিশু সার্জারি ইউনিটে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে গিয়ে তারা কোনো সিনিয়র চিকিৎসক এমনকি দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিউটি ডাক্তারও পাননি। উপস্থিত ছিলেন কেবল একজন ব্যক্তি—যিনি ইন্টার্ন ডাক্তার কি না সে নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।
তিনি জানান, শিশুর মাথায় বাঁধা গজ ব্যান্ডেজ খোলার দায়িত্বও রোগীর স্বজনদের উপর ছেড়ে দেওয়া হয়। নার্স বা অন্য কোনো সহকারীকে পাওয়া যায়নি। দূর থেকে চেয়ারে বসে ওই ব্যক্তি শিশুর মাথা ‘সোজা করে ধরতে’ বললেও চিকিৎসা শুরু করার কোনো উদ্যোগ ছিল না।
মিষ্টির ভাষায়,
“ওই ব্যক্তি ইউটিউবে সার্চ দিচ্ছিলো, পুরনো কাগজপত্র ঘাটছিলো—কিন্তু আমার সন্তানের চিকিৎসা শুরু করতে ৩০-৪০ মিনিটেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আমি প্রশ্ন করলে কোনো উত্তর না দিয়ে ইউটিউব দেখতেই থাকে।”
অভিযোগ আরও, প্রায় এক ঘণ্টা পার হলেও কোনো চিকিৎসা শুরু না করায় একজন নিচে নেমে হাসপাতালে ‘ভর্তি করাবেন কিনা’ তা জানতে চান। অথচ প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে ডাক্তাররা কিছুই জানাননি। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে শিশুটিকে একটি প্রাইভেট চেম্বারে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়।
সৈয়দা মাহফুজা মিষ্টি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
“এটাই যদি হয় বরিশালের সবচেয়ে বড় হাসপাতালের অবস্থা, তাহলে সাধারণ মানুষের বাঁচার উপায় কী? দুপুরের পর যদি চিকিৎসা না থাকে তাহলে হাসপাতালের সামনে সাইনবোর্ড লাগিয়ে ‘প্রাইভেট চেম্বারে যোগাযোগ করুন’ লিখে দিলেই হয়!”
তিনি ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা আর কারো সাথে না ঘটে সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন