ডেস্ক রিপোর্ট
১৯ মে ২০২৪, ১০:১৮ অপরাহ্ণ
অনলাইন সংস্করণ

দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও কাউখালীর ঐতিহ্যবাহী শীতলপাটির কদর

পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার চিড়াপাড়া পারসাতুরিয়া ইউনিয়নের সুবিদপুর গ্রামের শীতলপাটির সুনাম ছিল সারাদেশে। প্রায় ২০০ বছর ধরে এই গ্রামের পাটিকররা কোনোমতে ওই শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। কিন্তু যথাযথ স্বীকৃতি ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে দৃষ্টিনন্দন এ শীতল পাটির বিপন্ন দশা। দেশের যে কয়টি জেলায় শীতল পাটি তৈরি হয় তার মধ্যে পিরোজপুরের কাউখালী অন্যতম।

পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা সদর থেকে দুই কিলোমিটার দক্ষিণে সুবিদপুর গ্রামের অবস্থান। যে গ্রামের ৬০টি পরিবার আজও পাটি শিল্পকে তাদের বাঁচার একমাত্র অবলম্বন হিসেবে আঁকড়ে রয়েছে। এখানকার তৈরি শীতলপাটি পাইকারদের হাত ঘুরে চলে যায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, পটুয়াখালী, যশোর ও খুলনার বাজারে।

রপ্তানি পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি না পেলেও শৌখিন ব্যবসায়ী ও বেড়াতে আসা অতিথিদের মাধ্যমে শীতলপাটি যাচ্ছে ভারত, নেপাল, ভূটান, মালয়শিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, ব্রিটেনসহ অনেক দেশে। অনেকে আবার ঘরের শোভাবর্ধনে নকশা করা শীতলপাটি দেয়ালে টাঙিয়ে রাখেন।

সুবিদপুর গ্রামের রবিন পাটিকর জানান, কালের বিবর্তনে কাউখালীর পাটি শিল্প আজ বিলীনের পথে। অভাব তাদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে প্রতিনিয়ত। রাত-দিন পরিশ্রম করেও দু’বেলা দু’মুঠো আহার জোগাতে পারছেন না আবার বাপ দাদার পেশা তাই এ পেশা ছাড়তেও পারছেন না তারা। উচ্চশিক্ষা দূরের কথা নাম দস্তখত শেখারও সুযোগ পায় না তাদের ৭০ ভাগ শিশু।

পাটিকর সীমা রানি জানান, পাঁচ ফুট প্রস্থ ও সাত ফুট দৈর্ঘ্যের ভালো মানের একটি শীতলপাটি কাউখালীর বাজারে দুই হাজার থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। মধ্যম মানের একটি পাটির দাম ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা। এ ছাড়া ৪০০-৫০০ টাকায়ও কিছু শীতলপাটি মেলে।

তিনি আরও জানান, একটি শীতলপাটি তৈরি করতে সাধারণত তিন-চারদিন লাগে। একজন বয়স্ক পাটিকর সাত দিনে একটি পাটি তৈরি করতে পারেন।

গড় হিসেবে দেখা যায়, একটি পরিবারের তিন সদস্য মিলে কাজ করলেও মাসে ১০টিরও বেশি পাটি তৈরি সম্ভব নয়। ১০টি পাটি বিক্রি করে মাসে সর্বোচ্চ ছয়-সাত হাজার টাকা আয় হয়। এই আয়েই চলে পাটিকরদের সংসার। পাটি শিল্পের বিকাশে বড় সমস্যা হলো অর্থনৈতিক সংকট। শীতলপাটি তৈরির জন্য পাটিকরদের সরকারি, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কোনো ঋণ দেয় না। সরকার শীতলপাটি রপ্তানির উদ্যোগ নিলে পাটিকরদের সুদিন আসতো।

জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও বিশিষ্ট সমাজসেবক মামুন হোসাইন বাবলু জমাদ্দার বলেন, পাটি শিল্পটি আমাদের ঐহিত্য, এই শিল্পটি বাঁচিয়ে রাখতে সমাজের সকল মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।

চিরাপাড়া পারসাতুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লাইকুজ্জামান মিন্টু তালুকদার বলেন, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ দেশি-বিদেশি পর্যটক এলাকাটি পরিদর্শন করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স্বজনল মোল্লা আশ্বাস দিয়ে বলেন, এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে যা কিছু দরকার তার জন্য আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেষ্টা করবো।

Facebook Comments Box

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি আরিফ; সম্পাদক উবাইদা

ববি ছাত্রদল নেত্রীকে নিয়ে কটূক্তি: অভিযুক্তের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

৮ মাসেও হয়নি রেজাল্ট, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার হুমকি

“আমাদের পাঠশালা’র” শিশুদের হাতে শিক্ষা উপকরণ দিলেন সাবেক সচিব সফিকুজ্জামান

বরিশাল-৫ আসনে বিএনপির আস্থা” মজিবর রহমান সরওয়ার ” এর উপর

প্রাথমিকে শারীরিক শিক্ষা ও সংগীতের শিক্ষক পদ বাতিল

নভেম্বর ও ডিসেম্বরের ছুটি নিয়ে যা জানা গেল

সেন্টমার্টিন খুললেও পর্যটকদের যাত্রা অনিশ্চিত

আজ থেকে জাটকা শিকারের নিষেধাজ্ঞা শুরু

চিকিৎসকদের জন্য বিশাল সুখবর

১০

আজ থেকে বন্ধ হচ্ছে ১০টির বেশি সিম

১১

বরিশাল ব্যায়ামাগারে কথা-কাটাকাটির জের ধরে ছুরিকাঘাত, যুবকের অবস্থা সংকটাপন্ন

১২

শান্তি ও সহযোগিতার বিশ্ব গড়তে জাতিসংঘকে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

১৩

গ্রিল-নেটে বন্দি হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বিবির পুকুর

১৪

বরিশালের আড়িয়াল খাঁ নদী থেকে বিশালাকার নোঙর উদ্ধার

১৫

বরিশাল সিভিল সার্জন অফিসের সাবেক হিসাব রক্ষকের সম্পদের পাহাড়

১৬

বরিশাল “শেবাচিমে” নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মীদের নিয়ে গঠিত হলো ছাত্রদলের কমিটি

১৭

ছুটির দিনেও লাইব্রেরির রিডিং রুম খোলা রাখার দাবি

১৮

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ এর মাসিক কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত

১৯

বাস্তবায়ন নিশ্চিত হলেই সনদে সই করবে এনসিপি, ইসি পুনর্গঠনের দাবি

২০