বুধবার (৮ মে) সকাল ৮টা থেকে বরিশাল সদর ও বাকেরগঞ্জ উপজেলার ১৮১ ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে। তবে ভোট গ্রহণ শুরুর প্রথম দুই ঘণ্টায় বরিশাল সদর উপজেলায় শতকরা ৬ ভাগ ও বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ৪ দশমিক ৯০ ভাগ ভোট গ্রহণ হয়েছে।
বৃষ্টির কারণে বেলা ১১টা পর্যন্ত দুই উপজেলার একাধিক কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম লক্ষ্য করা গেছে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার সংখ্যা বাড়ছে বলে জানান প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা। এ সময়ের মধ্যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ওহিদুজ্জামান মুন্সি বলেন, বরিশাল সদর উপজেলায় সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত শতকরা ৬ ভাগ ভোট গ্রহণ হয়েছে। একই সময়ে বাকেরগঞ্জ উপজেলায় শতকরা ৪ দশমিক ৯০ ভাগ ভোট গ্রহণ হয়েছে। বরিশাল সদর উপজেলার মহাবাজ মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার জাবির আহমেদ বলেন, সকাল ৯টা ১১ মিনিট পর্যন্ত ৯০টি ভোট গ্রহণ করা হয়েছে।
এ ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ২ হাজার ৩৯৫ জন। পার্শ্ববর্তী কেন্দ্র উলালঘূণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আসাদুজ্জমান মোল্লা বলেন, ৯টা ২৩ মিনিট পর্যন্ত ১৫৬টি ভোট গ্রহণ হয়েছে। এ কেন্দ্রে মোট পুরুষ ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৩১৯ জন।
বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ এলাকার ৩০ নম্বর চরআইচা (২) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার জাহিদ মুরাদ শুভ বলেন, সকাল ৯টা পর্যন্ত ৬১টি ভোট গ্রহণ হয়েছে। এ কেন্দ্রে নারী-পুরুষ মিলিয়ে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ১৫ জন। ভোর থেকে ভোট শুরুর আগ পর্যন্ত বৃষ্টির কারণে ভোটার উপস্থিতি কম বলে জানিয়েছে প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়ছে বলে জানান তারা।
১১০ বছর বয়সী হায়তুন নেছা পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে পেরে আনন্দিত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, অল্প সময়ে ভোট দিতে পেরেছি। বরিশাল সদরের ভোটার নাজমা (৩০) বলেন, কেন্দ্রে ভোটার নেই। তাই এক মিনিটও লাইনে দাঁড়াতে হয়নি। নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পেরেছি।
এদিকে বরিশাল সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম জাকির হোসেন সকাল ৯টায় চাঁদপুরা ইউনিয়নের খোন্তাখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন। আরেক প্রার্থী মাহমুদুল হক খান মামুন চরবাড়িয়ার সাপানিয়া স্কুল কেন্দ্রে ভোট প্রদান করেছেন।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ওহিদুজ্জামান মুন্সি বলেন, তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। দুই উপজেলার ১৮১টি কেন্দ্রের মধ্যে ১২০ কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) চিহ্নিত করে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
তিনি আরও বলেন, দুই উপজেলায় ভোটগ্রহণ কার্যক্রমে ৩ হাজার ৭৭১ জন প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারি কাজ করছে। পাশাপাশি দুই উপজেলায় ৩৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট, ১১শ করে মোট ২২শ পুলিশ সদস্য, ৬ প্লাটন বিজিবি, র্যাবের চারটি ও ২টি কোস্টগার্ডের টিম মাঠে রয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, বাকেরগঞ্জের ৭৩টিকে গুরুত্বপূর্ণ চিহ্নিত করে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এখানে কোনো অনিয়ম দেখলেই কঠোর হাতে দমন করা হবে। বাকেরগঞ্জে ১১শ পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। পাশাপাশি মাঠে থাকবে র্যাব, বিজিবি সদস্যরা।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি) কমিশনার জিহাদুল কবির জানিয়েছেন, সদর উপজেলার কেন্দ্রগুলোতে ১১শ পুলিশ কাজ করবে। এর মধ্যে মোবাইল টিম থাকবে ৩৭টি। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে ৫ জন করে পুলিশসহ আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবে।
পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে একাধিক মোবাইল টিম কাজ করবে। বহিরাগত ঠেকাতে ১৯টি চেকপোস্ট থাকবে। সহকারী পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে প্রত্যেক ইউনিয়নে একটি টিম কাজ করবে। পাশাপাশি থাকবে স্টান্ডবাই ফোর্সসহ গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা।
বরিশাল সদর উপজেলায় পাঁচ চেয়ারম্যান প্রার্থী, চার পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং তিন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এ উপজেলার দুই প্রার্থী বাদে সবাই আওয়ামী লীগের। বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনের সব প্রার্থীও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতা।
এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৪, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ প্রার্থী লড়ছে। বরিশাল সদর উপজেলার ৬৮টি ভোট কেন্দ্রে এক লাখ ৯৫ হাজার ২৯৯ ভোটার ভোট তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। বাকেরগঞ্জের ১১৩টি ভোট কেন্দ্রে তিন লাখ এক হাজার ২০২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে