বরিশালের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা চকবাজার ও এর আশপাশের হকার্স মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের প্রতি অশোভন আচরণ, দাম নিয়ে প্রতারণা এবং শারীরিকভাবে আটকে রাখার অভিযোগ ক্রমেই বাড়ছে। বিশেষ করে মহসিন মার্কেটের একাধিক দোকানদারের বিরুদ্ধে নারী ক্রেতাদের প্রতি অশালীন মন্তব্য ও জোরপূর্বক পণ্য বিক্রির চেষ্টা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ভুক্তভোগী ক্রেতা আফিফা তার নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। তিনি লিখেন—
“বরিশাল চকবাজার এর পাশে মহসিন মার্কেট আজ গিয়েছিলাম একটা ব্যাগ কিনার জন্য
মেইন রাস্তার সাথেই দোকান টা ছিলো এবং দোকানে সামনে ২ জন্য ছেলে বলে এই আপু কি লাগবে এই দোকানে জান
তার পর গেলাম দুইটা ব্যাগ দেখলাম তেমন পছন্দ হয় নাই কিন্তু দাম জিগাসা করছি তারা দাম বলে ৩২৫০ টাকা ! আর অন্য অন্য দোকানে ওই Same ব্যাগ এই ৩৫০-৪ শো।টাকা করে বিক্রি
তাই আমি কিছু না বলে ওখান থেকে চলে আসতে চাইলাম কিন্তু তারা আমাকে আসতেই দিতেছিলো না
তো তারা দোকান ২ জন ছেলে আর এই মহিলা টা আমাকে বলে আপনি দাম কেন জিগাসা করছে এখন বলেন আপনি কত টাকা দিবেন
শেষে আমি বলছি এটা তো অন্য অন্য ৪ শো টা
তার পর অনেক কথা সুনাইছে এবং ১০ মিনিট দরে আমাকে আসতেই দিতে ছিলো না
ব্যাগ না নিয়ে আমাকে জেতে দিবে না এমন একটা পরিস্থিতি।
আমরা আগে জানতাম এমন টা সুদু ঢাকা গুলিস্তান এই হয়
কিন্তু এখন দেখি বরিশাল মেইন টাউন এ হচ্ছে
আমাকে আসতে না দেওয়া তে আমি ফোন বের করে ভিডিও চালু করি তখন আমাকে অনেক বাজে কথা বলে আসতে দিয়েছে
আপনরা যারা বরিশাল আছেন এবং মহসিন মার্কেট থেকে কিনাকাটা করেন তারা ভুলে ও এই দোকানে জাবেন না”
ফেসবুকে এই পোস্ট ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকেই মন্তব্য করেছেন, তারাও প্রায় একই ধরনের হয়রানির শিকার হয়েছেন। কোনো কোনো ক্রেতা অভিযোগ করেছেন, দোকানদারেরা ইচ্ছাকৃতভাবে কয়েকগুণ বেশি দাম বলেন এবং জোর করে পণ্য হাতে তুলে দিয়ে “দাম বলুন” বলে হুমকি-ধমকি দেন। কেউ দরদাম না করে চলে যেতে চাইলে গালমন্দও শুনতে হয়।
নগরীর কয়েকজন সচেতন নাগরিক জানান, আগে এ ধরনের অপমান-হয়রানি গুলিস্তান ও চকবাজারে বেশি শোনা যেত। কিন্তু এখন বরিশালের মধ্যেও একই সংস্কৃতি ঢুকে পড়েছে। নারী ক্রেতাদের প্রতি কিছু অসাধু দোকানির আচরণ ভয়ঙ্কর রকম অশোভন ও মানহানিকর হয়ে উঠছে।
এ বিষয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের এক কর্মকর্তা বলেন, “এ ধরনের ভোক্তাধিকার লঙ্ঘন ও মানসিক নির্যাতন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।”
এদিকে, জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ক্রেতাদের ভোগান্তি কমাতে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে এবং দোকানিদের শৃঙ্খলা রক্ষায় কড়া নজরদারি বাড়ানো হবে।
বরিশালের সচেতন ক্রেতারা এ ধরনের হয়রানির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং প্রয়োজন হলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করতে আহ্বান জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন