বছরের শুরু থেকেই তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে উপকূলের সাধারণ মানুষ। গত দুদিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায়। উপকূলবর্তী এ উপজেলায় মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে কলাপাড়া ঝড় সতর্কীকরণ রাডার স্টেশন।
তীব্র রোদ আর ভ্যাপসা গরমে সবেচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন ফুটপাতের দোকানদার, ঠেলাগাড়িচালক, অটোরিকশাচালক, সৈকতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষগুলো। পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকরাও পড়েছেন বিপাকে।
সৈকতে শরবত বিক্রেতা রুবেল হোসেন বলেন, অন্যান্য দিনের তুলনায় আজকে আমার বিক্রি অনেক বেশি। কারণ অতিরিক্ত গরম। সবাই ঠান্ডা শরবত খাচ্ছে। আজকে এক বেলায় আমি প্রায় ৩০০ লেবুর শরবত বিক্রি করেছি। যদিও খুব কষ্ট হচ্ছে গরমে তবুও কাজতো করতেই হবে।
কুয়াকাটা পৌর শহরে ভ্যানচালক আলম মিয়া বলেন, আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। চাকা চললে পেটে ভাত জোটে। প্রচণ্ড গরমে যাত্রী টানতে কষ্ট হচ্ছে। রোদে বারবার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় হোটেল থেকেও পর্যটকরা বের হচ্ছে না। এভাবে গরম পড়লে আমাদের ভ্যান চালানো বন্ধ করে দেওয়া লাগবে।
কুয়াকাটা সৈকতে বেড়াতে আসা পর্যটক নোমান বলেন, কুয়াকাটায় প্রচণ্ড গরম অনুভব হচ্ছে। শরীর ঘেমে একাকার হয়ে যাচ্ছে। কোনো উপায় না পেয়ে এখন ডাব খাচ্ছি। তাতেও তৃষ্ণা মিটছে না। তবুও যেহেতু বেড়াতে আসছি বসে থেকে তো আর লাভ নেই। তাই সৈকতে গোসল করতে আসছি।
বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কলাপাড়া স্টেশনের টহল টিম ইনচার্জ ইলিয়াস হোসেন বলেন, পর্যটক ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় ফায়ার সার্ভিসের একটি টহল টিম সব সময় প্রস্তুত আছে। যেকোনো দুর্ঘটনা মোকাবেলায় আমরা তৈরি আছি।
কলাপাড়া ঝড় সতর্কীকরণ রাডার স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার শরীফ বলেন, গতকাল সোমবার ও আজ মঙ্গলবার কলাপাড়ায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এটি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার শুধু এ বছরেরই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নয়। গত ৪৩ বছরের এটি সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। তবে উপকূলে বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা অনেকটা কমে যাবে। উপকূলে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এলাকা দিয়ে যে কোন সময় ঝড়ো হাওয়া বা ঝড়ো বৃষ্টি বয়ে যেতে পারে।