দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ জানালেও, বাংলাদেশের নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি ঢাকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর এবং দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়েও বাইডেন প্রশাসনের আগ্রহের কথা জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক প্রশ্নের জবাবে এমনটাই জানিয়েছেন।
ম্যাথিউ মিলারের কাছে জানতে চাওয়া হয়, বাংলাদেশের বিষয়ে আপনাদের সর্বশেষ প্রেসনোটে আমরা দেখেছি, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে নিরাপত্তা ক্ষেত্রে কাজ করতে আগ্রহী। এই ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে আছে-সন্ত্রাস দমন, সীমান্ত নিরাপত্তা, সাইবার নিরাপত্তা, সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকে (শেখ হাসিনা) আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত না জানিয়ে বাংলাদেশে নতুন সরকারের সঙ্গে বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে কাজ করা কীভাবে সম্ভব?
জবাবে তিনি বলেন, সারা বিশ্বে আমাদের এ ধরনের সম্পর্ক আছে। আমরা বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছি, ক্র্যাকডাউন নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, (বাংলাদেশ) সরকারের সঙ্গে কাজ করার দায়িত্ব (সুযোগ) আমাদের নেই। উল্লিখিত উভয় ক্ষেত্রেই যেসব বিষয়ে আমাদের উদ্বেগ আছে। সেইসঙ্গে আমরা বিশ্বাস করি যে, আমাদের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যুতে আমরা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সহযোগিতা করতে পারি।
তিনি আরও বলেন, আপনারা আমাকে আগেও বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগে প্রকাশ করতে দেখেছেন। আমরা নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে এমন প্রমাণ খুঁজে পাইনি। সেই নির্বাচন সামনে রেখে বিরোধী দলের হাজার হাজার সদস্যের গ্রেপ্তার নিয়েও আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছি।
ম্যাথিউ মিলারে বলেন, আমি দুটি বিষয় বলব। প্রথমত, গ্রেপ্তারকৃত সবার জন্য একটি ন্যায্য ও স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। দ্বিতীয়ত, আমরা বাংলাদেশ সরকারকে বিরোধী দলের সদস্য, গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও নাগরিক জীবনে অর্থপূর্ণভাবে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাই। সেইসঙ্গে আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাব।
এর আগে, গত সপ্তাহেই ম্যাথিউ মিলার বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গ্রেপ্তার করা বিভিন্ন বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। এ সময় তিনি বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আবারও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ব্যক্ত করেন।