ধানমন্ডি এলাকা থেকে তিন দিন আগে একজন ব্যবসায়ীর মুঠোফোন চুরি হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ধানমন্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পুলিশ অবস্থান শনাক্ত করেও মুঠোফোনটি উদ্ধার করতে পারছে না।
তদন্ত–সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, মুঠোফোনটি সক্রিয় রয়েছে। ফোন করে মুঠোফোনটি থানায় দিয়ে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু ফোন ধরে অপর প্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি হুমকি দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাকে বলেন, সাহস থাকলে এসে ফোন নিয়ে যান। পুলিশ সাহস করে আর মুঠোফোনটি উদ্ধার করতে যায়নি।
শুধু মুঠোফোন চুরির এ ঘটনা নয়, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার দিকে আদাবর থানা এলাকার নবোদয় হাউজিংয়ে প্রকাশ্যে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। চাপাতি হাতে একদল ছিনতাইকারী এক বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থীর রিকশা থামিয়ে মুঠোফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। আশপাশের লোকজন দাঁড়িয়ে দেখলেও কেউ এগিয়ে আসেননি। ভুক্তভোগী ঝামেলা এড়াতে মামলায় যাননি, জিডি করেছেন।
সম্প্রতি একজন মাদক ব্যবসায়ী রাজধানীর একটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ভিডিও কলে মাদক দেখিয়ে হুমকি দিয়ে বলেন, আগে বহুবার গ্রেপ্তার করেছেন, সাহস থাকলে এবার আসেন, গ্রেপ্তার করেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, থানার কার্যক্রম এখনো পুরোদমে চালু হয়নি। টহল ও তল্লাশি আগের মতো চলছে না। চুরি-ছিনতাই বেড়ে গেছে। কিন্তু থানায় ছিনতাইয়ের মামলা তেমন হচ্ছে না। চুরি ও হারানোর জিডি হচ্ছে বেশি।
গত বুধবার রাত থেকে গতকাল বিকেল পর্যন্ত ঢাকার বাড্ডা, হাতিরঝিল, রমনা, নিউমার্কেট ও ধানমন্ডি থানা ঘুরে দেখা গেছে, থানাগুলো এখনো আগের মতো লোকজন আসছেন না। ৫ আগস্ট সরকার পতনের আগে ঢাকার প্রতিটি থানায় গড়ে ৪০ থেকে ৮০টি জিডি ও ৫ থেকে ১০টি মামলা হতো। সেই সংখ্যা এখন অনেক কম। যেসব থানায় হামলা হয়েছিল, এখনো সেসব থানা ভবন মেরামতের কাজ চলছে। কিছু কিছু থানায় এখনো আনসার সদস্য মোতায়েন রয়েছেন।
পাঁচটি থানার অন্তত ১০ জন উপপরিদর্শকের (এসআই) সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনেক কথাই বলেন। প্রকৃতপক্ষে থানার সব কার্যক্রম এখনো চালু হয়নি। পুলিশ আসামি গ্রেপ্তারে বাইরে যেতে ভয় পাচ্ছে।
ছাত্র আন্দোলনের সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র–জনতার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অনেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। সরকার পতনের আগে-পরে তিন দিন পুলিশের বেশ কিছু স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর সারা দেশে পুলিশি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ সদস্যরা থানায় আসতে সাহস পাননি। স্থাপনা পাহারা দেওয়ার জন্য আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়।