যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক মেয়াদে দেশটির ক্ষমতায় ছিলেন। হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে ২০১৬ সালে চার বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তিনি। তবে দেশটির সংবিধান অনুযায়ী একজন ব্যক্তি দুই মেয়াদে সর্বোচ্চ আট বছর রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বে থাকতে পারেন। গত নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে হেরে গেলেও আবার তিনি ফিরতে চান হোয়াইট হাউসে। লড়বেন নভেম্বরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বরাবরই অন্যরকম এক চরিত্র ট্রাম্প। নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায়ই এমন সব পোস্ট করেন যেখানে নেটিজেনরা হতবিহ্বল হয়ে যায়। সর্বশেষ নির্বাচনে তার ‘স্টপ দ্য কাউন্ট’ পোস্টটি নিয়ে বিশ্বব্যাপী চর্চা হয়েছিল। বিভিন্ন সোশ্যাল গ্রুপে এটি নিয়ে নানা ট্রল ও মক পোস্ট করেছিলেন নেটিজেনরা।
২০২১ সালের মার্চে ট্রাম্পের টুইটার (বর্তমানে যেটি এক্স হ্যান্ডেল নামে পরিচিত) অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। পরে অবশ্য ইলন মাস্ক অ্যাপের মালিকানা কিনে নেবার পর নিজের অ্যাকাউন্ট ফেরত পান ট্রাম্প। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, টুইটারে ট্রাম্পের প্রতি আটটি পোস্টের মধ্যে একটি ‘ব্যক্তিগত আক্রমণ’ ধরনের। মার্কিন একটি টিভি শো ‘মর্নিং জো’-র একটি এপিসোড দেখে তিনি এতটাই রাগান্বিত হয়েছিলেন যে, সেই শো’টি না দেখতে দেশের মানুষকে টুইটে অনুরোধ করে বসেন তিনি। সেইসাথে অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক মিকাকে ‘পাগল’ বলে সম্বোধন করেন।
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাময়িক ও দীর্ঘমেয়াদে নিষেধাজ্ঞার কবলেও পড়েছেন ট্রাম্প। এরপর তিনি নিজের মালিকানাধীন ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ আনার পর সেখানেই নিজের পোস্ট, ছবি ও ভিডিও বেশি শেয়ার দিয়ে থাকেন। সম্প্রতি তিনি করে বসলেন আরেক কাণ্ড। ট্রুথ সোশ্যালে একটি ভিডিও আপলোড করেন ট্রাম্প। পোস্ট করা সেই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি সড়কে দুটি পিকআপ গাড়ি চলছে। দুটি গাড়িতেই ট্রাম্পপন্থী বিভিন্ন ছবি ও চিহ্ন রয়েছে। তবে শেষের গাড়ির পেছনে দেখা যায় হাত-পা বাঁধা বাইডেনের ছবি। ছবি দেখে মনে হবে যে, তাকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পিকআপের পেছনে বর্তমান প্রেসিডেন্টের ওই ছবিটি প্রিন্ট করে লাগানো হয়েছে। এই ঘটনার পর জো বাইডেন অভিযোগ করে বলেছেন, ট্রাম্প আসন্ন নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সহিংসত বাড়াতে চাইছেন।
এক বিবৃতিতে বাইডেনের নির্বাচনী ক্যাম্পেইনের মুখপাত্র মাইকেল টাইলার বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প নিয়মিত রাজনৈতিক সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন যেটি নির্বাচনের আগে সংঘাত বাড়ানোর জন্য যথেষ্ঠ।
উল্লেখ্য, বরাবরের মতোই ট্রাম্প তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিমায় সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব। তবে তার দলের নেতাকর্মীরা তার এসব কাজকে সমর্থন দেন। ২০২১ থেকে মার্চ-২০২৩ পর্যন্ত ট্রাম্প তার ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করতে পারেননি।