লাল জার্সি গায়ে মিরপুরের হোম ক্রিকেটে প্রবেশ এক দল সমর্থকের। তাদের কণ্ঠে উচ্চারিত হচ্ছিল ‘বরিশাল, বরিশাল’, গাল ভরা ছিল হাসিতে। একইসময়ে বেগুনি রঙের জার্সিতে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ভক্তদেরও আগমন। তাদেরও কণ্ঠ আর গালে একই চিত্র। তবে শেষ পর্যন্ত হাসি ধরে রাখতে পেরেছিল তামিম ইকবালের দলই, সঙ্গে ছিল তৃপ্তির ছায়া। কারণ ম্যাচটা যে ছিল বাঁচা-মরার। শুভাগত হোমের দলকে হারিয়ে বিপিএলের ফাইনালে খেলার আশা এখনও বাঁচিয়ে রেখেছে বরিশাল, দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে তারা খেলবে সাকিবের রংপুরের সঙ্গে।
চলতি বিপিএলে প্রায় প্রতিটা ম্যাচেই টসভাগ্যে জয়ী হয়েছেন বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তবে ম্যাচ পক্ষে আসছিল না। লিগ পর্বের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত প্লে-অফের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে তাদের। কষ্টার্জিত এই পথ পাড়ির পর বাঁচা-মরার লড়াইয়ে তাদের কাজটা সহজ করে দেয় চট্টগ্রাম। অথচ যাদের ওপর আস্থা ছিল তারাই তার প্রতিদান দিতে পারেননি সাগরপাড়ের ফ্র্যাঞ্চাইজিটিকে। টুর্নামেন্টে রেকর্ডগড়া সেঞ্চুরি পাওয়া তানজিদ হাসান তামিম ফিরেছেন মাত্র ২ রান করে। আসরজুড়ে দুর্দান্ত গতিতে ছুটতে থাকা শাহাদাত হোসেন দীপুকে এদিন বসিয়ে রাখা হয়। তার জায়গায় খেলানো হয় ইমরানুজ্জামান ফিরে গেছেন ৭ রান করেই। খরচ করেছেন ১৩ বল।
ভাগ্যদেবী এদিন সহায় ছিলেন জস ব্রাউনের প্রতি। তাই তো ৪.৫ ওভারের সময় ওবেদ ম্যাকয়ের বলে ক্যাচ উঠলেও তা ছেড়ে দেন তামিম ইকবাল। জীবন পেয়ে সুযোগ ছিল ইনিংসটা বড় করার, কিন্তু পারেননি এই অস্ট্রেলিয়ান। ফেরার আগে ২২ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৪ রান করতে পেরেছেন মাত্র। তবে এটাই চ্যালেঞ্জার্স ইনিংসের সর্বোচ্চ। অধিনায়ক শুভাগত ১৬ বলে চার বাউন্ডারিতে করেছেন ২৪ রান। এর বাইরে আর কেউ দাঁড়াতে পারেননি।
বরিশালের হয়ে কাইল মায়ার্স, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন এবং ওবেদ ম্যাকয় নিয়েছেন দুটি করে উইকেট। একটি করে উইকেট শিকার করেন তাইজুল ইসলাম এবং জেমস ফুলার। তাতে কিত্তনখোলা নদী পাড়ের দলটিকে ১৩৬ রানের বেশি লক্ষ্য দিতে পারেনি চট্টগ্রাম।
সেই রান তাড়ায় নেমে রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছিলেন তামিম এবং মায়ার্স। যদিও ইনিংসের দ্বিতীয় বলে রানের খাতা খোলার আগেই ফিরে যান সৌম্য সরকার। তবে তাতে কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি। অধিনায়ক আর ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডারের ৯৮ রানের জুটিই দলকে জয়ের ভিত গড়ে দেয়। মায়ার্স ৫০ রান করে ফিরে গেলেও তামিম ৪৩ বলে ৫২ রানের অপরাজিত থেকে জয় নিয়ে ফেরেন।’