আওয়ামী বিরোধীদের মাদক মামলা দিয়ে বাণিজ্য করতো পরিদর্শক মালেক আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীদের ম্যানেজ করে চব্বিশ বছরের চাকরি জীবনের প্রায় বাইশ বছর বরিশালেই কর্মরত আছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিতর্কিত ইন্সপেক্টর মালেক তালুকদার। ক্ষমতাধর নেতাদের মন জোগাতে আওয়ামী লীগ বিরোধী নেতাকর্মীদের মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে টাকা কামানোই ছিলো ইন্সপেক্টর মালেকের কাজ।
শুধু তাই নয়, অনেক বছর বরিশালে চাকরির সুবাধে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। মাদক দিয়ে ফাঁসানোর দায়ে বরিশাল থেকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হলেও টাকার বিনিময়ে ঘুরে ফিরে আবার বরিশালেই কর্মরত বিতর্কিত ইন্সপেক্টর মালেক। যুগের পর যুগ বরিশালে থাকায় গড়েছেন তোলা (মাসিক চাঁদা) বাণিজ্যের সিন্ডিকেট।
পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার কাছিপাড়া গ্রামের স্কুল শিক্ষক খালেক তালুকদারের ছেলে মালেক তালুকদার। ১৯৯৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর বরিশালে নিয়োগের মধ্যদিয়ে তার চাকরি। এরমধ্যে গত তিনবছর আগে ইন্সপেক্টর মালেক নগরীর কাউনিয়া এলাকার এক যুবককে মাদক হাতে দিয়ে পেটানোর দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনার দায়ে তাৎক্ষণিক তাকে বদলি করা হয় কক্সবাজার। এরপর সেখানে দুই বছর দায়িত্ব্ পালন শেষে সিনিয়রদের ম্যানেজ করে ফের বরিশালে যোগদান করেন ইন্সপেক্টর মালেক। যোগদানের কয়েকমাস পরেই বরিশাল নগরীর লঞ্চঘাট এলাকায় এক যুবককে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করলে উপস্থিত এলাকাবাসীর মারধর করে মালেকসহ ওই টিমের সকল সদস্যকে।
সরকারি চাকরিতে বদলি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হলেও এই বিতর্কিত ইন্সপেক্টর মালেক বাইশ বছর ধরে বরিশালেই কর্মরত রয়েছে। বরিশাল নগরীর বৈদ্যপাড়ায় গত তিনমাস আগে কিনেছেন কোটি টাকা মূল্যের প্লট। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সড়কেও কিনেছেন কয়েক কোটি টাকার সম্পদ। এছাড়া গ্রামের বাউফলেও করেছেন অঢেল সম্পদ।
অভিযোগ রয়েছে আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতো বরিশাল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এই বিতর্কিত ইন্সপেক্টর মালেক তালুকদার। এজন্য মোটা অংকের টাকা পেতেন তিনি। সে কারনেই যুগের পর যুগ বরিশালে চাকরি করে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। আর কেউ আওয়ামী লীগের বিরোধী রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলে থাকলে পড়তে হতো মালেকের রোষানলে।
বরিশাল বিএম কলেজের ছাত্র ইলিয়াস বলেন, গত তিন বছর আগে এই বিতর্কিত ইন্সপেক্টর মালেক ও তার সাথে সিপাহী আমার বাসায় আসে। তখন তারা বলেন, ‘তুই বিএনপি করো, তোকে আমাদের সঙ্গে যেতে হবে।’ তখন অনেক বাকবিতন্ডার পরে পনেরো হাজার টাকা দিলে চলে যায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের মালেকের টিম।
তারা যাওয়ার সময় ঐ ছাত্রের একটি চশমাও নিয়ে যায়তাছাড়া পরিদর্শক মালেক তালুকদার উপজেলার দায়িত্বে থাকলেও বরিশাল নগরীতে সবসময় সাথে একজন সিপাহী নিয়ে করেন আটক বাণিজ্য। তার এসব কর্মকা-ের বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো সদুত্তর না দিয়ে সংবাদটি থামাতে জোর লবিং তদবির চালান মালেক।
পরিদর্শক মালেকের বিষয়ে বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক বলেন, শুধু মালেক নয়। এরকম আরও কতিপয় সদস্য রয়েছে যারা আওয়ামী লীগের দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে তাদের তোষামোদ করে যুগের পর যুগ একই স্থানে কর্মরত আছে। আমরা এ বিষয়টি নিয়ে সিনিয়রদের জানানো হয়েছে।
আশাকরি এসব অসাধু সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এবিষয় জানতে চাইলে বরিশাল জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা তানভীর হোসেন খান বলেন, আমি তো বরিশালে নতুন। তাই তার (মালেক) বিষয়ে কিছু জানা নেই। তবে এখন যেহেতু জানলাম খোঁজখবর নিয়ে সিনিয়রদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।