বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে(ববি) চরম সেশনজট ও শিক্ষক সংকট থাকা সত্ত্বেও ৫১টি শূন্য পদের বিপরীতে মাত্র ১০ জন প্রভাষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যা একাডেমিক চাহিদার তুলনায় যৎসামান্য। অথচ অভিযোগ উঠেছে, প্রশাসন একাডেমিক সংকট সমাধানের বদলে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে বিরোধিতাকারী বিতর্কিত শিক্ষকদের অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়ার প্রক্রিয়ায় মনোযোগ দিয়েছে।
আর এমন বিতর্কিত পদোন্নতি প্রক্রিয়া বন্ধ করে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকি ৪১টি শূন্য পদে প্রভাষক নিয়োগের দাবিতে মঙ্গলবার উপাচার্য বরাবর জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে খোলা চিঠি দিয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাসিবাদ বিরোধী মঞ্চের ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ আবেদন পত্রে স্বাক্ষর করেছেন মো. মাইনুল ইসলাম, এস. এম. ওয়াহিদুর রহমান, মো. শরীফ উল্লাহ, রবিউল ইসলাম ও মোস্তফা শাহরিয়ার।
শিক্ষার্থীদের দাবি, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, সমাজকর্ম বিভাগের মতো তীব্র শিক্ষক সংকটে জর্জরিত বিভাগ থাকা সত্ত্বেও ‘ফ্যাসিস্ট শিক্ষকদের’ পুনর্বাসন করতে বেছে বেছে কয়েকটি বিভাগের মাত্র ১০ জন প্রভাষকের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে ওই সকল বিভাগের চিহ্নিত আওয়ামী “দোসর” শিক্ষকদের পদোন্নতি দেওয়া যায়। যারা জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সরাসরি শেখ হাসিনার পক্ষ নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরোধিতা করেছিলেন।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯০তম সিন্ডিকেট সভায় জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের বিরোধী ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে এ পদোন্নতি বোর্ড গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
উপাচার্য বরাবর দেওয়া ওই খোলা চিঠিতে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, “শিক্ষার্থীদের চাওয়ার প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিন্দুমাত্র ভ্রূক্ষেপ করেনি, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন একাডেমিক ও প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ পদে তাদেরকে (ফ্যাসিস্ট শিক্ষক) পদায়নের মাধ্যমে বরাবরই পুরস্কৃত করা হয়েছে। যেটা জুলাই-আগস্ট শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি অবমাননার শামিল। আমরা এই বিষয়ে প্রশাসনের কাছে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা চাচ্ছি।”
তারা আরও বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে তীব্র শিক্ষক সংকট সমাধান না করে এবং জুলাই-আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের বিরোধীতাকারী ফ্যাসিস্টদের বিচার নিশ্চিত না করে বরং তাদের পক্ষাবলম্বনের মাধ্যমে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে অবস্থান করায় আমরা শঙ্কিত। অতিসত্বর এই কার্যক্রম বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি।”
মন্তব্য করুন