ফরিদপুরের সালথায় পরকীয়া প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েন মো. সবুজ সরদার (৩৫) নামে স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা। পরে ওই নেতাকে বেঁধে গণপিটুনি দেন গ্রামবাসী।
এ ঘটনার ৪০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) ছড়িয়ে পড়েছে।রোববার ঘটনাটি জানাজানি হলে উপজেলাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এর আগে শনিবার উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের মুরাটিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
গণপিটুনির শিকার সবুজ মাঝারদিয়া গ্রামের মো. নান্নু সরদারের ছেলে ও সালথা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, চেয়ারে বসিয়ে রাখা হয়েছে এক যুবককে। তার হাত বাঁধা। একজন মুরুব্বি তার শার্টের কলার ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। এ সময় সবুজকে উপস্থিত সবার কাছে নিজের পরিচয় তুলে ধরতে শোনা যায়।
এদিকে ১ মিনিট ২ সেকেন্ডের আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি মঞ্চে এক নারীর সঙ্গে নাচছেন সবুজ। এ সময় তার হাতে মদের বোতল ছিল; যা নাচের তালে তালে খেতে থাকেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, সরকারদলীয় পদ ব্যবহার করে নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছেন সবুজ। তার স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। তারপরও পাশের মুরাটিয়া গ্রামের ৪ সন্তানের জননী এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া করেন তিনি। মাঝেমধ্যেই ওই নারীর বাড়িতে এসে দেখা করতেন। বিষয়টি জানাজানি হলে শনিবার সকালে ওই নারীর সঙ্গে ফের দেখা করতে এলে স্থানীয়রা তাকে ধরে ফেলেন। পরে তাকে চেয়ারে বেঁধে গণধোলাই দেন তারা।
ওই নারীর স্বামী বলেন, মোবাইল ফোনে আমাকে মাঝে মাঝে হুমকি দিতেন সবুজ। তাই শনিবার সকালে আমরা তাকে ধরে চেয়ারে বেঁধে পিটিয়েছি। যেহেতু সবুজ আমাদের পাশের গ্রামের সন্তান, তাই তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ঘটনাটি মীমাংসা করে ফেলেছি।
পরকীয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, মাঝে মাঝে ফোনে কথা বলত বলে জানি। এ প্রসঙ্গে সালথা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মো. সবুজ সরদার বলেন, আমি ঢাকায় ব্যবসা করি। স্থানীয় বিরোধের জেরে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার সঙ্গে এ আচরণ করা হয়েছে। এছাড়া ভিডিওগুলো সাজানো বলেও দাবি করেন তিনি।
সালথা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান জুয়েল বলেন, সবুজ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি। তবে কারো ব্যক্তিগত অপকর্মের দায় সংগঠন নেবে না। আমি ভিডিওগুলো দেখেছি। এগুলো যাচাই-বাছাই করে সত্যতা পেলে সবুজের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফরিদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফয়সাল আহম্মেদ রবিন বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সালথা থানার ওসি মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। তবে আমি পুলিশ পাঠিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি।