একই সঙ্গে এসব যানবাহন বন্ধে নানা ধরনের চক্রান্ত ও ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি এবং বিআরটিএর লাইসেন্স দিতে কালক্ষেপণের প্রতিবাদ জানান তিনি। বরিশাল নগরের ফকিরবাড়ি সড়কে জেলা বাসদ কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।সংবাদ সম্মেলনে মনীষা চক্রবর্তী বলেন, ‘ব্যাটারিচালিত যানবাহনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ স্বীকৃত লাইসেন্স দেওয়া, ট্রাফিক পুলিশের মামলার হয়রানি কমানোসহ নানাবিধ দাবিতে আমরা ধারাবাহিকভাবে ১২ বছর ধরে আন্দোলন করে আসছি।
এ আন্দোলন করতে গিয়ে আমরা বিভিন্ন সময় ক্ষমতাসীনদের নানা চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। পুলিশি হয়রানি, মামলা ও হামলার শিকার হয়েছি। কিন্তু কখনোই শ্রমিকদের পাশ থেকে সরে যাইনি। এবারও আবার নতুনভাবে ব্যাটারিচালিত যানবাহনের চালকদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে চক্রান্ত শুরু হয়েছে, যা আপনাদের মাধ্যমে আমরা সবাইকে জানাতে চাই।’
ব্যাটারিচালিত রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইকচালকদের কর্মসূটিতে হামলা চালানোর কড়া সমালোচনা করে মনীষা চক্রবর্তী বলেন, আজ বেলা ১১টায় বরিশালে ব্যাটারিচালিত যানবাহনের বিআরটিএ স্বীকৃত লাইসেন্স দেওয়া, মামলার হয়রানি বন্ধসহ চার দফা দাবিতে ব্যাটারিচালিত রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
মিছিলটি সিটি করপোরেশন মোড় থেকে যাওয়ার সময় এক মোটরসাইকেল আরোহী তীব্র গতিতে মিছিলের শ্রমিকদের ওপর তুলে দেন। এ সময় অজ্ঞাতপরিচয় কিছু লোক মিছিলে ঢুকে শ্রমিকদের ওপর হামলা করে এবং আশপাশে কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। শ্রমিকদের প্রতিরোধের মুখে তারা পালিয়ে যায়। তিনি মিছিলে এমন ষড়যন্ত্রমূলক হামলা ও ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করছেন।
মনীষা চক্রবর্তী আরও বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, ব্যাটারিচালিত যানবাহনের বিরুদ্ধে সক্রিয় গ্যাসচালিত তিন চাকার যানবাহনের একটি সংগঠন রোববার ব্যাটারিচালিত যানবাহনের বিরুদ্ধে মিছিল করেছে। তারা মিথ্যা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। পুরো বিষয়টি একটি সাজানো চক্রান্ত বলে আমরা মনে করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে মনীষা চক্রবর্তী বলেন, ‘আমরা মনে করি, ব্যবসায়িক স্বার্থে যারা ব্যাটারিচালিত যানবাহনের শ্রমিকদের পেটে লাথি মারতে চায়, তাদের চক্রান্তের অংশ হিসেবে এই হামলা, মিথ্যা মামলাসহ নানা ধরনের হয়রানির প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
তবে আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, যারা মনে করছেন, প্রশাসনিক হয়রানি করে শ্রমিকদের ন্যায্য আন্দোলন দমন করা যাবে অথবা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের মতো এই সুযোগে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা যাবে অথবা ব্যাটারিচালিত যানবাহন উচ্ছেদ করে অন্য গাড়ির ব্যবসা সুসংহত করা যাবে, তারা কখনোই সফল হবে না।
বরং এই পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে বিক্ষুব্ধতা বাড়বে এবং পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হবে। এই চক্রান্তের মধ্য দিয়ে কোনো উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তার দায়-দায়িত্ব ওই মহলকেই নিতে হবে।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি দুলাল মল্লিক, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বরিশাল জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক শহিদুল হাওলাদার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বরিশাল মহানগর শাখার সভাপতি বিজন শিকদার প্রমুখ।