অপেক্ষাটা ছিল প্রথম দিনের দ্বিতীয় সেশন থেকেই। সুনির্দিষ্টভাবে বললে মধ্যাহ্ন বিরতি থেকে ফিরে ঋষভ পন্তকে আউট করার পর। সেটি ছিল হাসান মাহমুদের চতুর্থ উইকেট। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে হাতছানি দিতে থাকা ফাইফার হাসানের ঝুলিতে ধরা দিল আজ চেন্নাই টেস্টের দ্বিতীয় দিনের সকালে। যশপ্রীত বুমরাকে তৃতীয় স্লিপে জাকির হাসানের ক্যাচ বানিয়ে নিলেন নিজের পঞ্চম উইকেট।
তবে চেন্নাইয়ের এম এ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে ভারতের প্রথম ইনিংসে অর্জনটা শুধু হাসানের নয়, অর্জনটা বাংলাদেশেরও। এই প্রথম ভারতের মাটিতে ইনিংসে পাঁচ উইকেট পেলেন বাংলাদেশের কোনো বোলার। শুধু পেসারই নয়, ভারতে মাটিতে খেলা ৩ টেস্টে পাঁচ উইকেট নেয়ার কীর্তি নেই বাংলাদেশি কোনো স্পিনারেরও।
২৪ বছর বয়সী হাসানের ব্যক্তিগত কীর্তিটা অবশ্য বাংলাদেশ-ভারত লড়াইয়েই সীমাবদ্ধ নয়। ২০২০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ভারতের মাটিতে পাঁচ উইকেট নেয়া মাত্র দ্বিতীয় পেসার হাসান। গত চার বছরে এই কীর্তিটা আর আছে শুধু টিম সাউদির। নিউজিল্যান্ডের ডানহাতি পেসার ২০২১ সালে কানপুর টেস্টে ৬৯ রানে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। আর এশিয়ানদের মধ্যে ভারতের মাটিতে সর্বশেষ ৫ উইকেট নিয়েছিলেন পাকিস্তানের ইয়াসির আরাফাত ২০০৭ সালের বেঙ্গালুরু টেস্টে।
চেন্নাইয়ে হাসানের ৮৩ রানে ৫ উইকেট ফিরিয়ে এনেছে বাংলাদেশের এক যুগ পুরোনো এক স্মৃতিও। ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে বাংলাদেশ দল আগের ম্যাচটি খেলেছে পাকিস্তানে। মাসের প্রথম সপ্তাহে শেষ হওয়া রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৩ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন হাসান।
বাংলাদেশের পেসারদের মধ্যে টানা দুই টেস্ট ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেয়ার আগের কীর্তিটি রবিউল ইসলামের। এই পেসার ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ে সফরে সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেটের পর দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন।
বাংলাদেশের পেসারদের মধ্যে বিদেশের মাটিতে দুবার পাঁচ উইকেট নেয়ার কীর্তিও শুধু রবিউল আর হাসানেরই। অন্যদের মধ্যে একবার করে বিদেশে ফাইফার নেয়ার কীর্তি আছে ইবাদত হোসেন, মনজুরুল ইসলাম, শাহাদত হোসেন, রুবেল হোসেন ও সৈয়দ খালেদ আহমেদ। ইবাদত ২০২১ সালে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে, মনজুরুল ইসলাম ২০০১ সালে বুলাওয়ে, শাহাদাত হোসেন ২০১০ সালে বুলাওয়ে, রুবেল ২০১০ সালে হ্যামিল্টনে ও খালেদ ২০২২ সালে সেন্ট লুসিয়ায় পাঁচ উইকেট পেয়েছিলেন।
সবমিলিয়ে হাসান মাহমুদ ভারতের বিপক্ষে এক ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেয়া পঞ্চম বাংলাদেশি বোলার। এর আগের চারটিই ছিল দেশের মাটিতে। ঢাকা টেস্টে ২০০০ সালে নাঈমুর রহমান, চট্টগ্রাম টেস্টে ২০১০ সালে সাকিব আল হাসান, শাহাদাত হোসেন ২০১০ সালে চট্টগ্রামে ও মেহেদী হাসান মিরাজ ২০২২ সালে মিরপুরে ভারতের বিপক্ষে ৫ উইকেট শিকার করেছিলেন।