সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল চেয়ে শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক এবং দ্রুত তা বাস্তবায়ন করে তাদেরকে পড়ার টেবিলে ফিরিয়ে আনার কথা বলেছে নাগরিক ঐক্য। আজ ৭ জুলাই দলের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলেন দলটির সভাপতি সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।

তিনি বলেন, সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের জন্য পরিপত্র জারি হওয়ার পর এক রিটের প্রেক্ষিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করা হাইকোর্টের রায় আপাতত বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। শিক্ষার্থীরা কোটা পুনর্বহাল না-করতে আন্দোলন করছে। আজ ৭ জুলাই শিক্ষার্থীরা পূর্বঘোষিত ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করতে ঢাকা শহরের বিভিন্ন মোড়ে, সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত এই আন্দোলনে স্পষ্ট সমর্থন দেখা যায় সাধারণ মানুষেরও।

তিনি কোটা পুনর্বহাল আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের পাশাপাশি আরও তিনটি দাবি জানান। এগুলো হলো ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে, সে ক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী শুধু অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে; সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটাসুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না ও কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে; দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
কোটা বাতিলের জন্য শিক্ষার্থীদের দাবির পক্ষে থাকা অনেক যুক্তির কোনোটির উল্লেখমাত্র না-করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শিক্ষার্থীদের এই দাবি অযৌক্তিক। আমরা মনে করি, শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক, এবং দ্রুত তা বাস্তবায়ন করে তাদেরকে পড়ার টেবিলে ফিরিয়ে আনতে হবে।

প্রধান বিচারপতি মহোদয় জানতে চেয়েছেন, রাস্তায় আন্দোলন করে আদালতের রায় পরিবর্তন করা যায় কি-না! অথচ বিশ্বের কতো রাষ্ট্র আর তার সরকার, আইনব্যবস্থারই পরিবর্তন ঘটেছে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। আদালতে রিট হয়েছে কোটা বাতিলের পরিপত্র বাতিল করতে, আদালত তা বাতিল করে শুনানি শুরু করেছে যা বর্তমানে মুলতবি রয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যাপক আন্দোলন ও দাবির মুখে জারি করা কোটা বাতিল পরিপত্র বহাল রেখেই শুনানি করতে পারতেন আদালত, অবশ্য দুটিই আদালতের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে। পড়াশোনা ছেড়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সাধারণ মানুষের দুর্গতি, অর্থনৈতিক ক্ষতির কথা ভেবে পরিপত্র বহাল রেখেই শুনানি চলমান রাখা যেতো।

বিজ্ঞপ্তিতে তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে, পরিপত্র বহাল রেখেই রিটের শুনানি কার্যক্রম চালু রাখতে হবে। না-হলে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে যাওয়া শিক্ষার উপর আরও প্রবল নেতিবাচক প্রভাব দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আমাদেরকে।