বসন্ত শেষে প্রকৃতিতে বইছে গ্রীষ্মের গরম হাওয়া। এ গ্রীষ্ম প্রকৃতিকে রাঙিয়েছে পলাশ, শিমুলসহ নানা রঙবেরঙের ফুল। তপ্ত গ্রীষ্মে বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ ক্যাম্পাসে ডানা মেলেছে রক্তলাল কৃষ্ণচূড়া। এ যেন কৃষ্ণচূড়ার ক্যাম্পাস। প্রতিবছর গ্রীষ্মের শুরুতেই পুরো ক্যাম্পাসে মুগ্ধতা ছড়ায় কৃষ্ণচূড়া ফুল। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, বৈশাখের রোদ্দুরের সবটুকু উত্তম গায়ে মেখে নিয়েছে রক্তিম এই পুষ্পরাজি। সবুজ চিরল পাতার মাঝে যেন আগুন জ্বলছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিএম কলেজের বিজ্ঞান অনুষদ,বাস্কেট গ্রাউন্ড মাঠ, জীবনানন্দ দাশ চত্বর, মূল ভবনের সামনেসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় কৃষ্ণচূড়া গাছের রাঙা ফুল প্রকৃতির সব রঙকে ম্লান করে দিয়েছে। এ যেন কৃষ্ণচূড়ার রঙিন রঙে মেতেছে ক্যাম্পাসটি। কৃষ্ণচূড়া ফুলে ভরা গাছগুলো নজর কাড়ে শিক্ষার্থীদের দর্শনার্থীদেরও।
সকালে গাছের নিচে কৃষ্ণচূড়ার ঝরে পড়া রক্তলাল পাপড়ি যেন পুষ্পশয্যা। এসব কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে শিক্ষার্থীরা ছবি তোলা, আড্ডা আর খুনসুটিতে মেতে উঠেছে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী, পথচারীদের হৃদয় কাড়ে নয়ন জুড়ানো এসব কৃষ্ণচূড়া ফুল।
দক্ষিণবঙ্গের এই ক্যাম্পাসটি যেন কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্যে লাল রঙে রঙিন শোভা পেয়েছে। কৃষ্ণচূড়ার ইংরেজি নাম ফ্লেম ট্রি। এর বৈজ্ঞানিক নাম হলো ডেলোনিক্স রেজিয়া। এটি ফ্যাবেসি পরিবারের অন্তর্গত একটি বৃক্ষ, যা গুলমোহর নামেও পরিচিত। কৃষ্ণচূড়া উদ্ভিদ উচ্চতায় ১২-১৪ মিটার হলেও শাখা-পল্লবে এটি বেশি অঞ্চলব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। শুষ্ক অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে কৃষ্ণচূড়ার পাতা ঝরে গেলেও নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এটি চিরসবুজ। কৃষ্ণচূড়ার জন্মানোর জন্য উষ্ণ বা প্রায় উষ্ণ আবহাওয়ার প্রয়োজন হয়।
কলেজের ইসলাম শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ আজিজুল ইসলাম বলেন, গন্ধে উদাস হাওয়ার মতো উড়ে তোমার উত্তরী কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জরি” কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো অনেকেই বাংলা কবিতা-গানে উপমা হিসেবে নানা ভঙ্গিমায় এনেছেন কৃষ্ণচূড়াকে
গ্রীষ্মের রুক্ষতা ছাপিয়ে কৃষ্ণচূড়া ফুল নিজের সৌন্দর্য তুলে ধরছে। গাছের ডালপালা জুড়ে শুধুই কৃষ্ণচূড়া ফুলের সমারোহ। এই ফুলের অপরুপ দৃশ্য যে কারও চোখে ও মনে এনে দিতে পারে শিল্পের দ্যোতনা। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন মোড়ে কৃষ্ণচূড়া ডাল-পালা ছাড়িয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এসব গাছে -গাছে ফুটে থাকা লাল ফুল পুরো ক্যাম্পাসকে রাঙিয়ে তুলিয়েছে।
কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার দিপা বলেন, ক্যাম্পাসে গেলে কৃষ্ণচূড়ার লাল ফুল দেখলে মনে খুব আনন্দ লাগে আর শান্তি একটা অনুভব হয়।
কলেজের আরেক শিক্ষার্থী মোঃ ফাইজুল্লাহ ফাইয়াজ বলেন, গতবছর কৃষ্ণচূড়া মিস করলেও এবছর আর মিস করিনাই। কৃষ্ণচূড়ার সাথে ক্যাম্পাসের এই অপরূপ সৌন্দর্য্যের মায়ায় পরে গেছি আমি।