বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলায় সামান্য ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস পেলেই বিদ্যুৎ চলে যাওয়াকে কেন্দ্র করে জনমনে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। বর্ষা মৌসুম শুরু হতেই এই সমস্যার প্রকোপ বেড়েছে। এমনকি ঝড় শুরু হওয়ার আগেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী। এতে করে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থী, রোগী, ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ঝড় বা বজ্রপাতের আশঙ্কা থাকলেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয় পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ। কিন্তু অনেক সময় ঝড় না হওয়াও সত্ত্বেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। এতে করে ঘরে-পড়ালেখা, ব্যবসা, ও চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে।
মুলাদী সদরের ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান বলেন, “ঝড় তো হলোই না, আকাশ একটু মেঘলা হলেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং! এতে করে ফ্রিজে রাখা জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ব্যবসার কি হাল হয়েছে, তা বোঝার কেউ নেই।”
অনলাইন ক্লাস, এসাইনমেন্ট কিংবা মোবাইল ফোনে পড়ালেখা করতেও বিদ্যুৎ না থাকায় বিপাকে পড়ছে শিক্ষার্থীরা।
ছাত্রী জান্নাতুল মাওয়া জানায়, “রাতে ঝড় আসবে শুনেই সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়। মোবাইল চার্জ দিতে পারি না, আলোও জ্বলে না। পরীক্ষার সময় এত ভোগান্তি সহ্য করা যায় না।”
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ না থাকায় রোগীদের সেবা ব্যাহত হচ্ছে। অনেক সময় অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর চালু রাখা বা ইনজেকশন দেয়ার সময়ও বিদ্যুৎ না থাকায় বিপদে পড়েন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
এ বিষয়ে মুলাদী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “ঝড় বা বজ্রপাত হলে লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই ঝুঁকি এড়াতে আগেই সাপ্লাই বন্ধ করা হয়। এটি একটি প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা।”
তবে এলাকাবাসীর প্রশ্ন, সামান্য মেঘ করলেই বিদ্যুৎ বন্ধ করাটা কতটা যৌক্তিক?
এলাকাবাসীর দাবি, সারা বছর বিদ্যুৎ নিয়ে এমন হয়রানি চলতে পারে না। বর্ষা মৌসুমে ঝুঁকি মাথায় রেখেই আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রাখা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও বিদ্যুৎ বিভাগের জবাবদিহিতার দাবি জানিয়েছেন তারা। অনেকে বলছেন, “একটা স্বাধীন দেশে সামান্য ঝড়বৃষ্টিতে বিদ্যুৎ চলে যাবে—এটা মানা যায় না।”
মন্তব্য করুন