যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতিকে সালাম না দেওয়ায় এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে সভাপতি সোহেল রানার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কৃত ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী ও সোহেল রানার অনুসারী রকি সহ কয়েকজন মিলে এফএমবি বিভাগের মাঞ্জুরুল হাসান নামের এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পিটিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে এগারোটার সময় যবিপ্রবির শহীদ মসীয়ূর রহমান (শ.ম.র.) হলের ৩০৮ নম্বর কক্ষে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে ঐ শিক্ষার্থীকে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ভুক্তভোগী মো. মাঞ্জুরুল হাসান যবিপ্রবির ফিশারীজ এন্ড মেরিন বায়োসায়েন্স (এফএমবি) বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।
এঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী যশোর কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি ও শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের প্রভোস্ট বরাবর পৃথকভাবে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ পত্রে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, শুক্রবার আনুমানিক রাত ১১.৩০ ঘটিকায় আমি শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের ৩০১ নম্বর রুম থেকে বাহির হলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা কে সালাম না দেওয়া এবং লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায় তার সামনে চলাচলের কারণে তার অনুসারী ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ রকি (বহিষ্কৃত), শারীরিক শিক্ষা ও ক্রিড়া বিজ্ঞান বিভাগের (পিইএসএস) ইসাদ হোসেন একই বিভাগের আল-আমিন,
মুশফিক ও শেখ বিপুল হাসান, ফার্মেসী বিভাগের রাইসুল হক রানাসহ(বহিষ্কৃত), বিশ্ববিদ্যালয়ের অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও কয়েকজন মিলে আমাকে সোহেল রানার নির্দেশে ৩০৮ নং রুমের মধ্যে নিয়ে গিয়ে আমার বুকের উপরে পাড়া দিয়ে এলোপাথাড়ি মারপিট করে দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম করে। আমার ডাক চিৎকারে হলের অন্যান্য ছাত্ররা এগিয়ে আসলে তারা খুন জখমের হুমকি দিয়ে চলে যায়।
এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সোহেল রানা বলেন, আমি এ অভিযোগের বিষয়ে অবগত নই। হলের ভিতরে কে লুঙ্গি পরবে আর কে সালাম দিলো এ বিষয়ে আমার কোন মাথাব্যাথা নেই। তবে গতকাল (শুক্রবার) আমাদের শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও ফিশারিজ ও মেরিন বায়োসাযেন্স এর কিছু ছেলে আমার রুমের সামনে জুনিয়রদের সাথে চিল্লাপাল্লা করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করলে আমি ও সাধারণ সম্পাদক তাকে ঝামেলা না করে রুমের সামনে থেকে চলে যেয়ে তাদের যার যার রুমে বসে আলোচনা করার কথা বলি। কে জিডি করেছে তা আমার জানা নেই, এ বিষয়ে আমি অবগত নই।
এবিষয়ে শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. মো. তানভীর ইসলাম বলেন, গতকাল রাতে মারামারির ঘটনা শুনে আমি আমার সহকারী প্রভোস্টদের নিয়ে হলে আসি। এসে দেখি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মাথায় পানি ঢালা হচ্ছে। পরবর্তীতে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। এবিষয়ে আজ একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে। হলে অবস্থান করা বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের বিষয়েও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা মনে করেন বিভিন্ন অপরাধে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃতদের হল এ অবস্থান এবং পুনরায় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়া রোধে প্রশাসন কঠোর হলে আবাসিক হলটিতে শৃঙ্খলা ফিরবে।