বরিশালে নগরীতে মাদক সেবনে বাঁধা দেওয়ায় জসিম (২৭) নামে এক যুবককে ও তার স্ত্রীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বখাটেদের বিরুদ্ধে।
রবিবার (২৮ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে বরিশাল নগরীর ৫নং ওয়ার্ড পলাশপুর এলাকার ২নং ইমোশন গল্লির ভুক্তভোগী জসিমের ভাড়া বাসার সামনে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী জসিম অভিযোগ করে বলেন, আমাদের এই জায়গায় স্থানীয় কিছু বখাটে যুবক আমার বাসার সাবানে গাঁজা সেবন করতে ছিল। এমন সময় আমি তাদেরকে সেবন করতে নিষেধ করায় বখাটেরা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার উপরে রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। এ সময় আমি পুলিশকে কল দিতে গেলে আমার হাতে থাকা মোবাইলটি ভেঙে ফেলে ও ব্যাগে থাকা ১৫ হাজার টাকা সন্ত্রাসীরা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। ডাক চিৎকার শুনে আমার স্ত্রী কাজল বেগম (২৫) ছুটে আসলে তাকেও মারধর করে এ সময় শ্লীলতাহানি করে তার গায়ে থাকা পোশাক ছিঁড়ে ফেলে ও গলায় থাকা একটি স্বর্ণের চেইন নিয়ে যায় তারা।
এ ঘটনায় (২৯ জানুয়ারি) জসিমের মা বিউটি বেগম (৪৫) বাদী হয়ে, বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামীরা হলেন, ৫ নং ওয়ার্ড পলাশপুরের ইসলাম নগর প্রথম গল্লির মোঃ সায়েম (২১) পলাশপুর ৩নং গুচ্ছগ্রাম এর আঃ রশিদের ছেলে মোঃ সাব্বির (২০), পলাশপুর বউ বাজার চৌধুরী হাউজিং গগন গল্লির মোঃ রফিকের ছেলে মোঃ সজিব (২৩) ও মোঃ রনিসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১২ জন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইমোশন গল্লিতে প্রতিনিয়ত দিনে দুপুরে দলবদ্ধ হয়ে মাদক সেবন ও ছিনতাই অপহরণ ইভটিজিংসহ নানা অপকর্ম করে আসছে বখাটেরা। এদের ভয়ে আতংকে দিন কাটাচ্ছে এলাকাবাসি।
জসীমের মা বিউটি বেগম জানান, আমি লোকমুখে মারামারির ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে আমার ছেলে ও পুত্রবধুকে আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। বর্তমানে আমার ছেলে ও পুত্রবধু শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হলেও বাকিরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং আমাদেরকে মামলা উঠিয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে এই ঘটনায় মামলা করার কারনে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করায় প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে তারা।
জসিমের স্ত্রী ভুক্তভোগী কাজল জানান, মারামারি চলাকালীন ডাক চিৎকার শুনে আমি ছুটে আসি তখন কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাকে মারধর ও গায়ের থাকা পোশাক ছিঁড়ে ফেলে। এই সময় আমি আমার স্বামীর প্রাণ বাঁচাতে পুলিশকে কল দিতে গেলে তার হাতে থাকা মোবাইলটি ভেঙে ফেলে। এবং আমার গলা থেকে একটি স্বর্ণের চেইন ও ব্যাগে থাকা পনেরো হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনা আমার শাশুড়ি বাদী হয়ে মামলা করেন। তবে একজনকে পুলিশ আটক করলেও বাকিরা প্রকাশ্যে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে। এবং আমাদেকে বলে তোদের একবার মাইর খেয়ে হয় নাই তোদেরকে আবার মারা লাগবে। মামলা যদি না উঠাও তাহলে কপালে শনি আছে।
কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় মারধরের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। এই ঘটনায় একজনকে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের খুব শীঘ্রই আইনের আওতায় আনা হবে।